নিষিক্ত পরিপক্ব ডিম্বকোষকে বীজ বলে। তবে কৃষি বিজ্ঞানের দিক হতে বিচার করলে বীজের সংগা এখানেই সীমাবদ্ধ নয়। গাছের যে কোন অংগ যেমন- ডাল, মূল, পাতা, কুঁড়ি, শিকড় ইত্যাদি যার দ্বারাই এর বংশ বৃদ্ধি করা সম্ভব তাকেই কৃষিবীজ বলে। যেমন- আঁখের টুকরা, কাটা আলু, পাথরকুচির পাতা, কাঁকরোলের শিকড় ইত্যাদি ।
ভালো বীজ : ভালো বীজের নিম্নের বৈশিষ্ট্য থাকা বাঞ্ছনীয়-
(ক) ভালোবীজ উন্নত জাতের হবে।
(খ) ভালো বীজে অন্য কোনো বীজের মিশ্রণ থাকবে না।
(গ) ভালো বীজ পোকা খাওয়া এবং রোগাক্রান্ত হবে না ।
(ঘ) ভালো বীজ নতুন, ঝকঝকে ও দুর্গন্ধমুক্ত হবে।
(ঙ) ভালো বীজের অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা উচ্চ মানের হবে।
(চ) ভালো বীজ সুপরিপক্ক, পুষ্ট, নিটোল ও সবই এক আকারে হবে।
ভালো গুণসম্পন্ন বীজকে পুষ্ট বীজ বলে। বীজ ফসল চাষ করে কেটে মাড়াই করলেই পুষ্ট বা ভালো বীজ পাওয়া যায় না। কারণ সদ্য মাড়াই করা বীজের মধ্যে খড়কুটা, ভাঙ্গা দানা, ছোট দানা, অন্য ফসলের বীজ, অন্য জাতের বীজ, আগাছার বীজ, পোকা, পোকা খাওয়া বীজ ও বিভিন্ন অপদ্রব্য থাকতে পারে। বীজের লট থেকে এ সকল অপদ্রব্য ও অপুষ্ট দানা কে বের করা ও পুষ্ট বীজ সংরক্ষনের জন্য নিম্নের ধাপগুলো অনুসরণ করতে হয়। যেমন-
ক) বীজ শুকানো
খ) বীজ পরিষ্কারকরণ
গ) বীজ সংরক্ষণ
ঘ) বীজ শোধন
ঙ) বীজ মোড়কীকরণ
উপরোক্ত সকল কাজকে একত্রে বীজ প্রক্রিয়াজাত করণ (Seed Processing) বলে।
বীজ পরিষ্কারকরণ : বীজ মাড়াই করার পর বীজ লটে পুষ্ট বীজ ছাড়াও অপুষ্ট বীজ, অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত দ্রব্য এবং অপদ্রব্য থাকে। এগুলো নিম্নরূপ-
ক) অপুষ্ট বীজ যেমন-
১) ভাঙা বীজ, থেঁতলানো বীজ, ফাটা, চ্যাপ্টা বীজ ইত্যাদি
২) অস্বাভাবিক বীজ।
খ) অপদ্রব্য
১) খড়কুটা, ছাল, খোসা, ডাল পাতা ইত্যাদি।
২) ধুলা, বালি, পাথর, নুড়ি, মরা পোকা, ইঁদুরের বিষ্ঠা ইত্যাদি।
উপরোক্ত অপুষ্ট, ভাঙা বীজ ও অপদ্রব্য নিম্নের তিনটি ধাপে পরিষ্কার করা যায়-
ক) প্রাথমিক পরিষ্কার: প্রি ক্লিনার নামক যন্ত্র দ্বারা বীজের প্রাথমিক খড়কুটা, ধূলাবালি পরিষ্কার করা হয়।
খ) চূড়ান্ত পরিষ্কার: ফসলের মূল বীজ অপেক্ষা ছোট এবং বড় আকারের বীজ বের করে ফেলা চূড়ান্ত পরিষ্কার করার প্রধান কাজ। এ কাজের যন্ত্রের নাম এয়ারস্ক্রিন ক্লিনার ।
গ) বিশেষ পরিষ্কার: বিভিন্ন অপদ্রব্য পরিষ্কার করে এয়ার স্ক্রিন ক্লিনার। কিন্তু ছোট বড় বীজ, বিভিন্ন রঙের বীজ পরিষ্কার করার জন্য ব্যবহার হয়—
১) ইন্ডেটেন্ড সিলিন্ডার— দৈর্ঘ্যের ভিত্তিতে বীজ পৃথক করে ।
২) স্পাইরাল সেপারেটর - চ্যাপ্টা ও খোলা বীজ আলাদা করে।
৩) ইলেট্রিক কালার সর্টার- এ যন্ত্র রং দেখে বীজ আলাদা করে ।
৪) গ্রাভিটি সেপারেটর - বিভিন্ন ওজনের বীজ আলাদা করা যায়
আরও দেখুন...